May 3, 2024, 3:40 pm

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
উজিরপুরে ১০ বছরের ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু ৮ মে মাহবুবুর রহমান মধুর ঘোড়া মার্কা বিজয় নিশ্চিত বলে মনে করেন বরিশাল বাসি ভালুকায় ৬টি চুরি হওয়া গরু উদ্ধার করে মালিককে হস্তান্তর করলেন ওসি রক্তের বাঁধন একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠন এর পক্ষ থেকে তীব্র তাপমাত্রায় কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষের মাঝে ঠান্ডা পানি ও টেস্টি সেলাইন বিতরন ভাবখালী ইউনিয়নে জমি সংক্রান্ত বিরোধে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত-১ গৌরনদী হাইওয়ে থানার টিএসআই মো: রুহুল আমিন খান এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম আশুলিয়ায় ডিবি পুলিশের অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার, দুই ডাকাতসহ ৫ জন গ্রেফতার মোরেলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে, আট প্রার্থীর মানোনয়ন পত্র জমা গরমে তরুণ তরুণীদের শরবত, ঠান্ডা পানি বিতরণ সুজানগরে লাগসই প্রযুক্তির প্রয়োগ ও সম্প্রসারণে সেমিনার ও প্রদর্শনী
নড়াইলে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ডা. নীহার রঞ্জন গুপ্তের পৈত্রিক বাড়ি

নড়াইলে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ডা. নীহার রঞ্জন গুপ্তের পৈত্রিক বাড়ি

উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে:

নড়াইলে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক ডা. নীহার রঞ্জন গুপ্তের পৈত্রিক বাড়ি। ১৯১১ সালের ৬ জুন পিতা সত্যরঞ্জন গুপ্তের কর্মস্থল কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে জানান, জন্মস্থান কলকাতায় হলেও তাঁর পৈত্রিক বাড়ি নড়াইলের লোহাগড়ার উপজেলার ইত্না গ্রামে।

ডা. নীহার রঞ্জন গুপ্ত চাকরিজীবি পিতার বিভিন্ন স্থানে অবস্থানকালেই বাংলাদেশের গাইবান্ধা হাইস্কুলসহ বেশ কয়েকটি স্কুলে তিনি পড়াশুনা করেন। অবশেষে ১৯৩০ সালে তিনি কোন্ন নগর হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। পরবর্তীতে কৃষ্ণনগর কলেজে ভর্তি হন এবং সেখান থেকেই তিনি আইএসসি পাস করে ডাক্তারি পড়ার জন্যে কারমাইকেল মেডিকেল কলেজে (আর. জি. কর মেডিকেল কলেজ) ভর্তি হন।
ডাক্তারি পাস করে বেশ কিছুদিন নিজস্বভাবে প্রাকটিস করেন। অতঃপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সামরিক বাহিনীর ডাক্তার হিসেবে তিনি যুদ্ধেযোগ দেন। চাকরি জীবনের বাধ্যবাধকতা তাঁর কাছে বিরক্তিকর মনে হওয়ায় তিনি এ চাকরি ত্যাগ করে কলকাতায় ব্যক্তিগতভাবে আবার ডাক্তারি শুরু করেন। অল্প সময়ের মধ্যেই চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে কলকাতায় বিশেষ পরিচিত হয়ে ওঠেন।
নীহাররঞ্জন গুপ্তের বয়স যখন ১৬ বছর তখন তাঁর প্রথম লেখা উপন্যাস ‘রাজকুমারী’ প্রকাশিত হয়। ডাক্তার নীহাররঞ্জন গুপ্ত পেশায় চিকিৎসক হলেও মানব মানবীর হৃদয়ের ঘাত-প্রতিঘাত ও মানবিক দ্বন্দ্বের একজন অন্যতম রূপকার। রহস্য উপন্যাস লেখায় তিনি সিদ্ধহস্ত। কেবলমাত্র রহস্য উপন্যাস নয়, তাঁর সামাজিক উপন্যাসগুলো সুখপাঠ্য যা পাঠককূলের হৃদয় আকৃষ্ট করে। বাংলা সাহিত্যে তিনি উপন্যাসকে অনান্যমাত্রায় নিয়ে গেছেন।
তাঁর লিখিত উপন্যাসের সংখ্যা দুইশতেরও অধিক। তাঁর প্রকাশিত উপন্যাসগুলোর মধ্যে ‘মঙ্গলসূত্র’, ‘উর্বশী সন্ধ্যা’, ‘উল্কা’, ‘বহ্নিশিখা’, ‘অজ্ঞাতবাস’, ‘অমৃত পাত্রখানি’, ‘ইস্কাবনের টেক্কা’, ‘অশান্ত ঘূর্ণি’, ‘মধুমতি থেকে ভাগীরতী’, ‘কোমল গান্ধার’, ‘অহল্যাঘুম’, ‘ঝড়’, ‘সেই মরু প্রান্তে’, ‘অপারেশন’ প্রভৃতি। নীহার রঞ্জনের চল্লিশের অধিক উপন্যাস চলচ্চিত্রায়িত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘উল্কা’, ‘বহ্নিশিখা’, ‘উত্তর ফাল্গুনী’, ‘লালুভুলু’ প্রভৃতি।
তাঁর কালজয়ী উপন্যাস ‘লালুভুলু’ পাঁচটি ভাষায় চিত্রায়িত হয়েছে। ১৯৮৩ সালে উপন্যাসটি বাংলাদেশেও চিত্রায়িত হয় এবং দর্শককুলের প্রশংসা অর্জন করে। নীহার রঞ্জনের অনেক উপন্যাস থিয়েটারে মঞ্চস্থ হয়েছে।
চিকিৎসক হিসেবে অতি কর্মচঞ্চল জীবনযাপনের মধ্যেও নীহার রঞ্জন গুপ্ত রেখে গেছেন অসংখ্য সাহিত্যধর্মী সৃষ্টি যা আপন সত্ত্বায় ভাস্কর হয়ে থাকবে। নীহার রঞ্জন গুপ্ত ১৯৮৬ সালের ২০ জানুয়ারী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কলকাতায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
এ গুণী মানুষটির ইতনা গ্রামের পৈত্রিক শেষ স্মৃতিচিহ্নটুকু এখনই রক্ষা করা না হলে অচিরেই কালের গর্ভে বিলিন হয়ে যাবে। এলাকাবাসী দাবি জানিয়ে বলেন, বিশ্বকবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম পশ্চিমবঙ্গে জন্মগ্রহন করলেও তাঁরা আমাদের কবি। তাঁদের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী যথাযোগ্য ভাবে পালিত হয়। অথচ এ গুণী ঔপন্যাসিক আমাদের সাহিত্যের ইতিহাসে এতটা সমুজ্জল থেকেও আমরা তাকে ভুলতে বসেছি। আমাদের প্রজন্ম জানেই না নীহার রঞ্জন গুপ্ত কে, তিনি কি ছিলেন এবং নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইতনা গ্রাম তাঁর পৈত্রিক নিবাস। তাই অবিলম্বে তাঁর পৈত্রিক বাড়িটি রক্ষা করে তাঁর জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় সরকারিভাবে পালন করা হোক। ঔপন্যাসিক ডা. নীহার রঞ্জন গুপ্ত জেলার গুণী ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম। তাঁর পৈত্রিক বাড়িটি সম্প্রতি সরকার কর্তৃক সামান্য সংস্কার করা হয়েছে। এটিকে জাতীয় ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতির দাবি রাখে।

উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD